বন্ধুত্ব মানে কি? প্রকৃত বন্ধু কে? আর জীবনে চলার পথে বন্ধুইবা কেন প্রয়োজন? Dhananjoy Das has talked about Friendship.

আজকের এই লেখাটিতে, আমি মূলত পক্ষে বলব, আমার জীবনে আমি কেমন মানুষ চাই বা কেমন হতে চাই? কাদের কে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি?

আসলে আজকের এই লেখাটিতে থাকবে, বন্ধুত্ব মানে কি? প্রকৃত বন্ধু কে? আর জীবনে চলার পথে বন্ধুইবা কেন প্রয়োজন?

চিত্রে একজন অপরজনকে টেনে তুলছে


তো চলো বন্ধুরা শুরু করা যাক আজকের আলোচনা:

1. আমি ঐ রকম মানুষই চাই, যারা কারো উপকার করুক আর না করুক অন্ততপক্ষে কারো কোনো ক্ষতি করবে না । পাশে থাকা মানুষের ভুলগুলো সৎ সাহস নিয়ে দেখিয়ে দিতে পারবে, সর্বদা সঠিক পথে চলার পরামর্শ দিবে । অন্যের মতামতকে সম্মান প্রদর্শন করবে এবং জোর করে কোন কিছু চাপিয়ে দেবে না। যে কোনো কিছুতে ভেদাভেদ করে না কিন্তু ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য করতে পারে । আর সব সময় সবাইকে সমানভাবে ভালোবাসে । আরো কত বৈশিষ্ট্য আছে! যা কি লিখে বলা যায়? কিছুতো লেখার বাইরে থেকেই যায়। আর আমিও এরকম একজন মানুষ হতে চাই, সবার সুখের ভাগি না হতে পারলেও যেন দুঃখের ভাগি হতে পারি। আমি যাতে কারো সমস্যার কারণ না হই বরং তাদের সমস্যার সমাধান হতে পারি সেই চেষ্টা করি । আমি তাদেরকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি যারা ভালো মানুষের আড়ালে কখনো কোনো মুখোশ রাখে না । অর্থাৎ যে বাইরে দেখতে যেমন তার ভিতরটাও তেমন। প্রকৃতপক্ষে এমন মানুষ পাওয়া খুব দুষ্কর একটা বিষয়। কিন্তু আমি আশা করি এমন মানুষ আমার জীবনে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।


এবার বন্ধুত্ব নিয়ে কিছু বিস্তারিত বলা যাক:

1. বন্ধুত্ব হল একটা সম্পর্কের শক্তি । জানিনা এই বন্ধুত্বের সংজ্ঞা কি? তবে আমি নিজের ভাষায় বন্ধুত্ব কি সংজ্ঞা দিতে চাইলে বলব, “প্রেমের অপর নাম বন্ধুত্ব । কারণ যে সম্পর্কের মধ্যে প্রেম আছে সেই সম্পর্কটা বলা হয় বন্ধুত্বের সম্পর্ক । আর এই বন্ধুত্বের সম্পর্কটা হতে পারে মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয় স্বজন কিংবা প্রতিবেশীদের সাথে । বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে চলার পথে নানা জায়গায়। যেমন: চাকরি করার ক্ষেত্রে অফিসে, লেখাপড়া ক্ষেত্রে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে। বন্ধুত্বের মধ্যে থাকে না কোন লিঙ্গের ভেদাভেদ কিংবা বয়সের পার্থক্য । যে কোন লিঙ্গের মানুষ যে কোন লিঙ্গের সাথে কিংবা যে কোন বয়সের মানুষ যে কোন বয়সের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি করতে পারেন । বন্ধুত্বের সম্পর্কে কোন লাভ-লোকসানের হিসাব থাকে না বরং থাকে শ্রদ্ধা-সম্মান, ছোটখাটো রাগ-অভিমান, দুষ্টামি-শয়তানি প্রেম-ভালোবাসা ইত্যাদি। অর্থাৎ প্রতিটি সম্পর্কের আধার হলো বন্ধুত্ব।” বন্ধুত্ব নামক সম্পর্কের শক্তিটি ছাড়া এই জগত অচল, মানব-মানবের প্রতি বন্ধুত্বের আচরণ করলে জগৎ হয়ে উঠবে আনন্দময়ী ।

চিত্রের অনুভুতি টি নিজে নিজে অনুভব কর 


2. তাহলে দ্বিতীয় যে প্রশ্নটি আসে তা হলো, বন্ধু মানে কি? আর প্রকৃত বন্ধুইবা কে? আসলে “বন্ধু” সংজ্ঞাটা আগের বন্ধুত্বের সাথেই অন্তর্নিহিত। যে বন্ধুত্ব রক্ষা করে চলে সেই হল বন্ধু । তবে বন্ধু অনেক প্রকার হতে পারে কিন্তু আজকে আলোচনায় আর সে দিকে যাওয়া হলো না। তবে প্রকৃত বন্ধু তাকেই বলা হয়, “যে সম্পর্কের মধ্যে কোনো মানে কিংবা চাহিদার সন্ধান করে না অর্থাৎ সম্পর্ক থেকে কোন ধন-সম্পদ প্রাপ্তির আশা করে না । বরং নির্লোভী হয়ে সামনা সামনি কিংবা গোপনে অপর বন্ধুর কল্যাণে কাজ করে, কখনো অমঙ্গল প্রত্যাশা করে না । ভালো-মন্দ, সুখ-দুঃখ যেকোনো কাজে সবার আগে থাকে এবং নিজের মনে করে কাজ করে সেই হলো প্রকৃত বন্ধু।" বলে রাখা ভালো, এমন প্রকৃত বন্ধু পাওয়া বর্তমান সময়ে একটা দুস্কর কাজ হয়ে যাচ্ছে । একজন প্রকৃত বন্ধু কখনোই অপর বন্ধু থেকে কোন কিছু আড়াল করে না বরং কখন কি কাজ করতে হবে তা দুজনে মিলে পরিকল্পনা করে । একজন প্রকৃত বন্ধু অপর বন্ধুর খুঁটিনাটি, ছোট-বড় সকল বিষয়ে ধারনা রাখে এবং যেকোনো সময় যেকোনো কাজের জন্য প্রস্তুত রাখে নিজেকে । একার পক্ষ থেকে কখনো প্রকৃত বন্ধু হয়ে ওঠা সম্ভব নয়। একজন প্রকৃত বন্ধু পেতে বা হয়ে উঠতে হলে বন্ধুত্বের মধ্যে উভয়ইর সমান ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার দরকার হয়।

3. এই জগতে একার পক্ষে কোন জীবের চলা সম্ভব নয়। ঠিক তেমনি মানুষ হিসেবে আমরাও একা বসবাস করতে পারবো না। আমরা সমাজ বদ্ধ জীব। জীবনে কোন না কোন কাজে দৈনিক একে অপরের উপর নির্ভর করতে হয় । নিজেকে সঠিক পথে যথাসময়ে যথা লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাস্তবিক এক বন্ধু দরকার হয়। জীবনে আগানোর প্রতিটি ধাপে সহায়ক হিসাবে একজন বন্ধুর ভূমিকা অপরিসীম । এমন অনেক কাজ আছে, যা আশেপাশে কাউকে বলা যায় না। তবে একজন প্রকৃত বন্ধু থাকলে তাকে সে কাজে একজন সহযোগী ভাবা যায়।

আজকে এই পর্যন্ত। আগামী পর্বে, নতুন কোন তথ্য নিয়ে এবং কোন বিশ্লেষণমূলক লেখা নিয়ে হাজির হব। সে পর্যন্ত ভালো থাকো, সুস্থ থাকো এবং আমার সাথেই থাকো ।

ধন্যবাদ সকল শুভাকাঙ্ক্ষী বন্ধুদের 😍😍😍

Post a Comment

0 Comments