সুখ কি? সুখ কত প্রকার ও কি কি? আর ব্যক্তি হিসাবে কীভাবে সুখে থাকতে পারি? চলুন জানা যাক...

 যদি কাউকে প্রশ্ন করা হয় যে সুখ কি? তাহলে তার উত্তর কি হবে? চলুন আমার ভাবনার সাথে আপনার উত্তর টা সাদৃশ্য কিনা তা যাচাই করা যাক। 

Be Happy

সুখ আসলে মনের একটা স্থিতি মাত্র। যার কোন প্রকৃত অস্তিত্ব নাই। এই সুখ গুলো আমাদের কাছে বাস্তবে স্থির মনে হলেও তা কিন্তু আপেক্ষিক। যদি ভুল না করি তাহলে একটা উদাহরণের সাহায্যে আলোচনা করা যাক। যদি আমরা রাস্তায় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন লক্ষ্য করে থাকি, তাহলে দেখা যাবে ছোট, মাঝারি কিংবা বড় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন রয়েছে। আপনি সব কাজের জন্য নির্দিষ্ট করে যে কোন একটাকে বলতে পারবেন না যে এই যানবাহনটাই উত্তম কিন্তু আবার যদি কোন কাজের সাপেক্ষ যাচাই করেন তাহলে সহজেই কিন্তু কোনটা কিসের জন্য ভালো তা বলা যায়। যেমন কোন ব্যক্তি চলাচল করতে চাইলে সাইকেল, রিক্সা কিংবা ছোট ছোট যেকোন যানবাহনই যথেষ্ট আবার যদি বহু মানুষ একসাথে  চলাচল করতে চায় তাহলে কিন্তু সাইকেল বা রিক্সা দিয়ে হবে না দরকার হবে বাসের মতো বড় ধরনের যানবাহনের।  আবার সব বড় যানবাহনে মানুষ চলাচল করতে পারবে না। যেমন মাল বাহি ট্রাক, তবে মানুষ চলাচল করতে পারলেও তা বাসের মতো হবে না।  এই যে একটার সাথে যখন আরেকটা কে তুলনা করতেছি তখন কিন্তু কোনটাই পারফেক্ট মনে হচ্ছে না। কোন কিছু পরিমাপ কেবল কোন কিছুর সাপেক্ষেই করা যায়। তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে যে সুখ কিসের সাপেক্ষে পরিমাপ করা যায়? 

এই যে কিছু পূর্বে যানবাহনের উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েছি যে আসলে কোন কিছুর সাপেক্ষে কোন কিছুই একক ভাবে আদর্শ নই। তাই ব্যক্তিগত সুখ লাভ করতে হলে ব্যক্তি কেবল নিজের সুখের সাথে নিজের মনের স্থিতির তুলনা করতে পারে। যার মনের স্থিতি যত বেশি স্থির সে তত বেশি সুখী। সুখ, মনের স্থিতির সমানুপাতিক।  আচ্ছা, মনের স্থিতি বিষয়টি আবার কেমন? 

বুঝতে সমস্যা হতেই পারে তাই একটু ভেঙ্গে বলি। আসলে মনের স্থিতি ব্যক্তির দু'টি বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে। 

১. নিজের বিবেক - বুদ্ধি বা জ্ঞান 

২. ব্যক্তি যে কর্ম করতেছে তার ফল মানে জড় জাগতিক বিষয়বস্তু নিজে ভোগ করার চেষ্টা 

১. যদি কোন ব্যক্তি তার জ্ঞান তথা বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে কোন কর্ম করে তাহলে সেই কর্মটা কখনই অপকর্ম হবে না। আর তখন তার মনে কোন ভয়, রাগ কিংবা সন্দেহ থাকবে না তার কর্মের জন্য। আর এমন অবস্থায় মনের স্থিতি হয় স্থির। আর হে, কোন ব্যক্তি যদি প্রকৃত অর্থে জ্ঞানী হয় তাহলে সে মনের স্থিতিবস্থা নিজের বিবেক দ্বারা বিশেষ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

 ২. আর কোন ব্যক্তি যদি তার কর্মের ফল স্বয়ং সে নিজে ভোগ করতে চায় তাহলে তার দ্বারা অপকর্ম হবার প্রবণতা বেশি। কেমন করে? চলুন উদাহরণ থেকে জানা যাক, ধরুন আপনি এক অন্ধ ব্যক্তিকে তার বাসার সামনে থেকে ধরে ধরে হাটে নিয়ে গেছেন। হাটে তাকে একটা চায়ের দোকানে বসানোর সময় দোকানের কিছু খাবার দেখে আপনার ইচ্ছে হল তা খেতে। কিন্তু আপনার কাছে অর্থ নাই আর আপনি যেহেতু জড় বিষয়বস্তুর প্রতি অতি আকৃষ্ট সেহেতু আপনি অন্ধ ব্যক্তির কাছে ভালো ভাবেই চাইলেন যে সে যেনো আপনার কর্মের ফলস্বরূপ আপানাকে তা খাবার ব্যবস্থা করে দেয় কিন্তু অন্ধব্যক্তিটি তা করতে পারে নাই। তাহলে এখন আপনার মনে রাগে কিংবা বিষন্নতায় ভরপুর হবে। এমতাবস্থায় আপনার মনের স্থিতি ভাব হল অস্থিরতা।  এই যে আপনি এখানে সৎকর্ম করলেন তার ফল যদি এখন নিজে স্বয়ং ভোগ করতে না চাইতেন আর নিজের লোভের নিয়ন্ত্রণ করতেন তাহলে কিন্তু আপনার মনের স্থিতি স্থির হতো।

আর হে, যারা জড় জাগতিক বিষয় বস্তুর প্রতি অতি আকৃষ্ট তারা সুকর্ম কিংবা কুকর্ম যেইটা করুক তাদের মনে স্থিতি স্থির হতে পারেন না। কেননা এমন মনে কাম ( যৌন উত্তেজনা ), ক্রোধ  ( কোন কিছুতেই রাগ রাগ ভাব ) ও  লোভ  ( কোন কিছু দেখলেই তাতে মোহ জাগে )  এর প্রভাব বেশি থাকে। জড় বিষয় বস্তুর প্রতি যার আকর্ষণ যত বেশি সে তত যাই কিছুই পায় না কেনো তার আরও পেতে ইচ্ছে হয়। এবার আপনার পাল্লা নিজেকে কোনটি দাবি করবেন! আমার দৃষ্টিতে সুখ কেবল মনের একটা স্থিতি যা ধনসম্পদ দিয়ে বা কোন কিছু ভোগের মাধ্যমে অর্জন করা যায় না। আজ থেকে সুখি থাকার চেষ্টা করবো।  আপনার ও চেষ্টা করে দেখতে পারেন!! 


আর হে, সুখের প্রকারভেদ নিয়ে পরে সময় নিয়ে আবার কথা হবে।

Post a Comment

0 Comments